মোবাইল (Mobile) ফোনের ইতিহাস, মোবাইলের বৈশিষ্ট্য, এন্ড্রয়েড ফোনের উপকারিতা বা গুরুত্ব এবং সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ।

বর্তমানে মোবাইল ফোন ছাড়া যেন চলেই না। আমরা সবাই মোবাইল ফোন ব্যবহার করছি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কাজগুলোকে আরোও অনেক বেশি সহজ করে দিয়েছে। মোবাইল ফোন দিয়ে যে কোন সময় নানা কাজ করা যায় এর মাধ্যমে এবং দেশি-বিদেশের যেকোনো মোবাইলে অডিও কল, ভিডিও কল ও ব্যবহারকারী কাছে এসএমএস বা খুদে বার্তা প্রেরণ ও গ্রহণ করা যায়। মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে আমাদের জীবনে আরও অনেক সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে তুলেছে।

মোবাইল ফোনের ইতিহাস (History of Mobile Phones) :

মোবাইল ফোন তারবিহীন টেলিফোন বিশেষ। মোবাইল ফোন অর্থ ভ্রাম্যমাণ বা স্থানান্তরযোগ্য। ৪ এপ্রিল ১৯৭৩ সালে মার্টিন কুপার মটোরোলা (Motorola) কোম্পানিতে কর্মরত থাকা অবস্থায় প্রথম মোবাইল ফোন আবিষ্কার করেন। এর জন্য মার্টিন কুপার কে মোবাইল ফোনের আবিষ্কারক বলে অভিহিত করা হয়। এই ফোন সহজে যে কোনো স্থানে বহন করা যায় বলে একে মোবাইল ফোন নামকরণ করা হয়েছে। মোবাইল ফোন একটি দ্বিমুখী যোগাযোগ ডিভাইস যা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে তারবিহীন উপায় নেটওয়ার্ক কভারেজে থাকা এবং যে কোন ভৌগলিক অবস্থানে থাকা অপর যে কোনো টেলিকমিউনিকেশন ডিভাইসের সাথে ভয়েস এবং টেক্সট মেসেজ আদান-প্রদান করা যায়।

মোবাইল ফোনের ইতিহাস

মোবাইল ফোন এর বৈশিষ্ট্য (Features of Mobile Phone) :

১. সকল জিএসএম (Global System for Mobile Communication) ফোনে একটি সিম কার্ড ব্যবহার করা হয়। GSM মোবাইলের সিমকার্ড গুলো আকারে ছোট ডাক-টিকেটের মত। সাধারণত মোবাইল ফোনের ব্যাটারি নিচে এটি স্থাপন করতে হয়। প্রতিটি মোবাইল ফোনেয় সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান তার নিজস্ব সিম কার্ড ব্যবহার করে। এদের একটি অপরটির থেকে আলাদা হয়ে থাকে।
২. সকল মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সাথে কথা বলার এবং মেসেজ আদান-প্রদানের সুবিধা দিয়ে থাকে।
৩. সব মোবাইল ফোনের একটি রিচার্জেবল ব্যাটারি থাকে,যা ফোনের মধ্যে পাওয়ার বা বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।
৪. সকাল মোবাইল ডিভাইসের একটি IMEI: International Mobile Equipment Identity নম্বর থাকে। এর ফলে ট্র্যাকার সিস্টেমের মাধ্যমে চুরি সেট পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।
৫. হ্যান্ডসেটের কি-প্যাড ব্যবহার করে ইনপুট এর কাজ করা হয়। তবে বর্তমানে আধুনিক এন্ড্রয়েড মোবাইল গুলো তে টাচস্ক্রিন ব্যবহার করে ইনপুটের কাজ করা হয়।
৬. সকল মোবাইল ফোন ডিভাইসের একটি একক আইএমএসএআই বা IMSI (International Mobile Subscriber Identity) নম্বর থাকে, যা অন্যান্য নেটওয়ার্কের সাথে ইন্টারনেটের কানেক্ট হওয়ার জন্য যেকোনো মোবাইল নেটওয়ার্কের ব্যবহার হয়।

জেনে নিন : মোবাইল ফোন পানিতে পড়লে অবশ্যই যে পাঁচটি কাজ করবেন বা করা উচিত?

এন্ড্রয়েড মোবাইলের উপকারিতা বা গুরুত্ব :

মোবাইল ফোন এর গুরুত্ব দিন দিন বেড়েই চলেছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মানুষের কাজ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো সহজ করে দিয়েছে। দিন দিন এর ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোবাইল ফোনের দিয়ে ঘরে বসেই অনেক কাজ করা যায়। একমাত্র মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মানুষের সাথে সম্পর্ক আরোও কাছাকাছি হয়ে হয়েছে। এখন একে অপরের সাথে এমন এমনকি বিদেশেও সবার সাথে যোগাযোগ রাখা যায় এবং দিখে কথা বলা যাই, যা আগে মানুষ ভাবতেই পারত না। এন্ড্রোয়েড ফোনের এর মাধ্যমে ছবি তুলা, অনলাইনে মিটিং করা, শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে ক্লাস করতে পারে, ইমেইল প্রেরণ ও গ্রহণ, SMS এর মাধ্যমে সহজে তথ্য আদান-প্রদান করা এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চিকিৎসা থেকে শুরু করে বিনোদন সহ নানা কাজে ব্যবহার করা হয়। মোবাইল ফোন বর্তমান সময়ে বা এই আধুনিক যুগে আমাদের সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এর ফল আমাদের জীবন আরো সুন্দর সহজ ও আরামদায়ক এবং মনোরঞ্জন বা বিনোদনমূলক হয়েছে।

এন্ড্রয়েড মোবাইলের উপকারিতা বা গুরুত্ব

মোবাইল ফোনের সুবিধা:

  • মোবাইল ফোনের অন্যতম সুবিধা হচ্ছে এর মাধ্যমে সহজে বিশ্বের যেকোনো জায়গায় খুব কম সময়ে এবং সহজে যোগাযোগ করা যায়।
  • মোবাইল এর মাধ্যমে দেশ-বিদেশের যেকোন মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর কাছে এসএমএস (SMS) বা খুদে বার্তা প্রেরণ ও গ্রহণ করা যায়।
  • বিশ্বের যেকোন প্রান্তে থাকা মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর কাছে খুব সহজে মাল্টিমিডিয়া মেসেজ বা এসএমএস (MMS ) প্রেরণ ও গ্রহণ করা যায়।
  • জিপিএস বা GPS (Global Positioning System) এর ব্যবহার বা সুবিধা আমরা উপভোগ করা যায়। এটির মাধ্যমে যে কোন মানুষের বা যানবাহনের অবস্থান জানা যায়।
  • খুব কম খরচে ভিডিও কলে (Video Call) কথা বলা যায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে।
  • ছবি তুলা, গান শোনা, ভিডিও দেখা এবং অডিও ভিডিও রেকর্ড করা যায়।
  • ইন্টারনেট যুক্ত স্মার্টফোন স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে ইমেইল প্রেরণ ও গ্রহণ করা যায় এবং চ্যাটিং করা যায়।
  • Bluetooth প্রযুক্তি ব্যবহার করে অল্প সময়ে ও খুব সহজে তথ্য আদান-প্রদান করা এবং যায় ইন্টারনেট ব্রাউজ করা যায়।
  • এখন মোবাইল ফোন টাকা আয় করা যায় এবং শিক্ষা অর্জন ও গবেষণা কাজেও ব্যবহৃত করা হয়।
  • মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ঘরে বসে অনলাইন শপিং করা যায় এবং বিদ্যুৎ , গ্যাস, পানি ও ইন্টারনেটের বিল পেমেন্ট এবং ডিশ বিল বা কার্ড রিচার্জ করা যায়।

এছাড়া মোবাইল ফোনে আরো অনেক সুবিধা রয়েছে। এটি মানুষের জীবনকে সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ এবং মনোরঞ্জন করে তুলেছে।

জেনে নিন : মোবাইল দিয়ে টাকা আয় করার উপায় গুলো

মোবাইল ফোনের অসুবিধা: সব জিনিসের সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও থাকে ঠিক তেমনি মোবাইল ফোনের যেমন সুবিধা রয়েছে এর মধ্যে কিছু অসুবিধাও রয়েছে তা নিম্নরূপ:

  • মোবাইল ফোন আমাদের অনেক সময় নষ্ট করে। এক সময় ধরে অনেক ক্ষণ ব্যবহার করার ফলে চোখের সমস্যা হয়ে থাকে।
  • ফোনের মাধ্যমে গেমই, অডিও-ভিডিও দেখা এবং কথা বলা যায় যার কারণে লেখাপড়া মনোযোগ নষ্ট হয়।
  • মোবাইল এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হতে হয় আমাদের।
  • দীর্ঘ সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে এর প্রতি আসক্তি সৃষ্টি হয় এবং স্বাস্থ্যহানির শিকার হতে হয় ।
  • মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য আমাদের মেগাবাইট ক্রয় বা WIFI (Wireless Fidelity ) সংযোগ নিতে হয় যার জন্য অর্থ ব্যয় করতে হয়।

জেনে নিন : মোবাইল বা স্মার্টফোন কেনার আগে যে বিষয়গুলো অবশ্যই জানা জরুরি

আশা করি সবাই খুব সহজেই বুঝতে পেরেছেন মোবাইল ফোনের ইতিহাস, মোবাইলের বৈশিষ্ট্য, এন্ড্রোয়েড ফোনের উপকারিতা বা গুরুত্ব এবং সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ। মোবাইল ফোন আমাদের বর্তমান জীবনে কতটা সহজ করে দিয়েছে। আর আপনার যদি মোবাইল ফোন নিয়ে আরও কিছু জানতে চান তাহলে কমেন্ট করুন।

Share the article..

Leave a Comment