পড়ায় মন বসানোর সহজ উপায় | পড়ার প্রতি মনোযোগী হওয়ার উপায়

পড়ার টেবিলে বসে থাকতে কারোই ভালো লাগেনা। টেবিলে বসে বইয়ের পাতা দেখে সবারই অসহ্য লাগে। কিন্তু যতই অসহ্য লাগুক না কেন, পড়াশোনা করে একজন শিক্ষার্থী প্রথম কাজ। পড়াশোনা না করে আসলে কোন ডাক্তার, উকিল ও ব্যারিস্টার সফল হয়নি।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে কিভাবে তারা তাহলে পড়াশোনা করল? এই প্রশ্নের উত্তর রয়েছে। বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা পড়াশোনা করেছে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে।
ওরাই মন বসানোর সহজ উপায়
আজকের এই আর্টিকেলটি একদম শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়লে আপনি পড়ার প্রতি মনোযোগী হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
পড়ার প্রতি মনোযোগী হওয়ার উপায় সম্পর্কে আজকের এই লেখাটি পড়লে আরো জানতে পারবেন-
  • পড়ায় মন বসানোর উপায়
  • পড়ায় মন বসানোর সহজ উপায়
  • লেখা পড়ায় মন বসানোর উপায়
  • পড়ায় মনোযোগী হওয়ার উপায়
  • পড়ার প্রতি মনোযোগী হওয়ার উপায়
  • কিভাবে পড়াশোনায় মনোযোগ দিব
  • কিভাবে পড়াশোনায় মনোযোগ দেওয়া যায়
  • কিভাবে লেখাপড়ায় মনোযোগ দেওয়া যায়
  • কিভাবে লেখাপড়ায় মনোযোগী হব
তো চলুন শুরু করা যাক বেশি কথা না বলে মূল আলোচনায়।

লেখা পড়ায় মন বসানোর উপায়

১. আগ্রহ নিয়ে আনন্দের সাথে পড়া

পড়ায় মন বসানোর সহজ উপায়গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো আগ্রহ নিয়ে পড়াশোনা করা। আপনি যখন কোন একটা টপিক করতে যাবেন তখন সেটা বাস্তব জীবনের সাথে তুলনা করবেন।
তুলনা করে দেখবেন এই টপিকটি বাস্তব জীবনের সাথে কিভাবে সম্পর্কিত এবং এটি পড়লে আপনি কিভাবে উপকৃত হতে পারেন।
পাঠ্য বইয়ের অধিকাংশ পড়াগুলো আমাদের বাস্তব জীবনের জন্য অনেক প্রয়োজনীয়। তাই বাস্তব জীবনে যেকোনো সমস্যার সমাধানের জন্য আপনি যদি পড়াগুলো পড়েন তাহলে পড়া লেখায় মন বসাতে পারবেন।
যখন আপনার মন অনেক বেশি খারাপ থাকবে তখন জোর করে পড়াশোনায় মন বসানোর চেষ্টা না করাই ভালো। কারণ জোর করে পড়াশোনায় মন বসানো গেলেও সেই পড়া খুব বেশি ফলপ্রসু হয় না।
কারণ মনের সুস্থতার সাথে শরীরে সুস্থতার সম্পর্ক রয়েছে এবং মন খারাপ থাকলে তখন পুরোপুরি মনোযোগ দিয়ে কোন শেখা বা বোঝা সম্ভব হয় না। সুতরাং আপনাকে পড়াশোনা করতে হবে আগ্রহ নিয়ে আনন্দের সাথে।

২. জীবনের লক্ষ্য স্থির করে নেওয়া

ছাত্র জীবনের এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। আপনি ভবিষ্যতে নিজেকে কোন অবস্থানে বা কোন পেশায় দেখতে চান সেটা পূর্ব থেকে ঠিক করে নেয়া উচিত। পড়াশুনা মনোযোগী হওয়ার এটি একটি কার্যকরী উপায়।
আপনি যদি সত্যিই পড়াশোনা মনোযোগী হতে চান, তবে আপনাকে জীবনের লক্ষ্য ছাত্র অবস্থায় ঠিক করে নিতে হবে।
আপনি যদি জীবনের লক্ষ্য ঠিক করে নিতে পারেন, তবে আপনার মধ্যে দায়িত্ববোধ চলে আসবে।
আর এই দায়িত্ববোধের তাগিদে আপনি পড়াশোনা করতে বাধ্য হবেন এবং পড়ার টেবিলে আপনার বসে থাকতে ইচ্ছে করবে । কারণ আপনি জানেন আপনি কি জন্য পড়াশোনা করছেন।
জীবনের লক্ষ্য ঠিক করে নিলে আপনি পড়ার প্রতি সব সময় মোটিভেট থাকবেন। আশা করি এখন থেকে জীবনের লক্ষ্য স্থির করে নিবেন। তাহলে লেখাপড়ায় মন বসাতে পারবেন।

৩. পড়ার টাইম সিডিউল করে নেওয়া

পড়ার প্রতি মনোযোগী হওয়ার উপায়গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম সেরা একটি কার্যকরী উপায়।
আপনি যদি সত্যিই পড়ায় মনোযোগ বসাতে চান, তবে আপনাকে অবশ্যই করার একটি বাস্তবায়নযোগ্য রুটিন তৈরি করে নিতে হবে।
আপনি সারাদিন কি কি করবেন এবং কোন কোন বিষয়ের পড়াশোনা করবেন সে সম্পর্কে একটা বিস্তারিত টাইম শিডিউল তৈরি করে নিবেন।
পড়ার টাইম শিডিউল থাকলে আপনার করার প্রতি আপনার মস্তিষ্ক স্বয়ংক্রিয়ভাবে চাপ দেবে এবং আপনি পড়ার টেবিলে বসার তাগিদ অনুভব করবেন।
তবে পড়ার টাইম সিডিউল তৈরি করার পূর্বে একটা কথা মনে রাখতে হবে রুটিনটি যেন অবশ্যই বাস্তবায়নযোগ্য বা সম্ভবপর হয়।

৪. টেবিলে বসে পড়ার অভ্যাস তৈরি করা

আপনি যদি নিয়মিত টেবিলে বসে থাকার অভ্যাস তৈরি করেন, তবে একটা সময় পর আপনার টেবিলে বসে থাকতে মন চাইবে না তখন এমনিতে করার প্রতি আগ্রহ তৈরি হবে।
বিছানায় শুয়ে শুয়ে না পড়ে টেবিলে বসে পড়ার অভ্যাস তৈরি করা উত্তম। আপনার যদি পড়তে মন নাও চায় তবু টেবিলে বসে থাকবেন। যখন মন চাইবে তখন পড়া শুরু করবেন।
কারণ বিছানায় বসে পড়াশোনা করলে খুব সহজে চোখে ঘুমের ভাব চলে আসে এবং আপনি পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারেন না। পড়াশোনায় মন বসানোর আরেকটি সেরা উপায় হলো এটি।

৫. ছোট ছোট টার্গেট নিয়ে পড়া

আপনি চাইলে আপনার পড়ার অংশকে ছোট ছোট ভাবে ভাগ করে পড়তে পারেন। আপনি একটা টপিককে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে পড়লে খুব সহজে পড়ার প্রতি মনোযোগ দিতে পারবেন এবং সেটি কার্যকরীভাবে করে শেষ করতে পারবেন।
কারণ ছোট কোন কাজ করার প্রতি আমাদের আগ্রহ থাকে। যখন আমরা কোন একটা বড় কাজ সামনে দেখতে পাই আমাদের মস্তিষ্ক তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।

৬. আজেবাজে চিন্তা না করা

পড়ার সময় আমাদের মাথায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে আজেবাজে চিন্তায় এসে ভিড় করে। তখন আপনার উচিত হবে আজেবাজে চিন্তায় মন না দিয়ে নিজের পড়ার প্রতি মনোনিবেশ করা।

৭. অপ্রয়োজনীয় মনোযোগ নষ্টকারী জিনিসপত্র দূরে রাখা

আমরা যখন পড়তে বসবো তখন পড়ার টেবিলের আশেপাশে মনোযোগ নষ্ট হয় এমন জিনিসপত্রগুলো দূরে রাখা রাখবো। বিশেষ করে হাতের মোবাইল সবসময় দূরে রেখে পড়তে বসা উচিত।
তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে একমাত্র মোবাইল ফোনটি আপনার পড়ার প্রতি মনোযোগ নষ্ট করার কারণ। সত্যি কথা বলতে, পড়ায় মন বসানোর সহজ উপায়গুলোর মধ্যে একটি অন্যতম কার্যকরী একটি উপায়।

৮. নির্দিষ্ট সময় পর পর বিরতি নেওয়া

পড়াশোনার প্রতি একটানা বেশিক্ষণ মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয় না। ঠিক এই কারণে একটানা পড়ার টেবিলে বসে না থাকে একটা টাইম পিরিয়ড পরপর আপনার দেওয়া উচিত হবে।
একটু বিরতি দিয়ে পুনরায় পড়া শুরু করলে আপনার মস্তিষ্ক আবার আগের মতো সক্রিয় হয়ে কাজ করবে।

৯. ব্যায়াম ও খেলাধুলা করা

আপনি নিয়মিত ব্যয়াম ও খেলাধুলা করলে, আপনার শরীর ও মস্তিষ্ক আরো বেশি সক্রিয় হবে। নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম অর্থাৎ খেলাধুলা কিংবা ব্যায়াম করলে আমাদের শরীরের হরমোনের প্রকাশ ঘটে একটু ভিন্নরূপভাবে।
যেটা শুধু পড়াশোনা নয়, যেকোনো কাজের প্রতি একটু বেশি মনোযোগ করে তুলতে পারে। পড়ার প্রতি মনোযোগী হয় সহজ উপায় হলো নিয়মিত ব্যায়াম ও খেলাধুলা করার অভ্যাস করা।
এটা যেমন আপনার শরীরকে সুস্থ রাখবে তেমনি আপনার মনকেও সুস্থ রাখবে। আর মন সুস্থ থাকা মানেই হলো যে কোন কাজে আরও বেশি মনোযোগ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়া।

১০. পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ

পড়াশুনার প্রতি দীর্ঘক্ষণ মনোযোগ ধরে রাখতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই আপনার শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে হবে। এই সুস্থতার জন্য যেমন শারীরিক পরিশ্রম অর্থাৎ ব্যায়াম কিংবা খেলাধুলা করা প্রয়োজন।
তার পাশাপাশি আপনাকে নিয়মিত সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। আপনার শরীরে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবারের অভাব বা ভিটামিনের অভাব দেখা দিলে আপনি পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারবেন না।
শরীরে পুষ্টির অভাব হলে আপনি সহজে ক্লান্ত হয়ে পড়বেন এবং অলসতা আপনাকে ছাড়বে না। লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগী হওয়ার এটিও নতুন একটা সেরা উপায়।

উপসংহার

আশা করি আজকের আর্টিকেল পড়ার প্রতি মনোযোগী হওয়ার উপায় আপনার ভালো লেগেছে। পড়ায় মন বসানোর সহজ উপায় সম্পর্কে লেখা এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়লে অনেক বেশি মনোযোগী হতে পারবেন।
Share the article..

Leave a Comment